Breaking Ticker

How Did Karna Die In Mahabharat // মহাভারত পর্বে কিভাবে কর্নের মৃত্যু হয়েছিল ?

নমস্কার, সনাতন ধর্মের জয়। Sanatan Sikkha র ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই আরো একটি নতুন আলোচনা নিয়ে। আজকে আমরা আলোচনা করবো মহাবীর karna / কর্নকে নিয়ে। যা জানলে সবারই একটু খারাপ লাগে। মহাভারতের কর্নের Karna / কর্নের বিষয় মনে পড়লে আমারও খারাপ লাগে আর মনে কষ্ট হয়। (Mahabharat) মহাভারত পর্বের কিছু আশ্চর্য্যজনক ঘটনা নিয়ে। এর আগের পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি (Mahabharat) মহাভারত যুদ্ধের এমন কিছু তথ্য নিয়ে যা হয়ত অনেকেরই অজানা। যদি আপনারা সেই তথ্য না পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই পড়বেন। আপনাদের ভালো লাগবে। এখানে ক্লিক করলে সরাসরি সেই পোস্টে চলে যাবেন। তারপরে এই পোস্টটি পড়ুন। এটা আমার ব্যাক্তিগত অনুরোধ ছিল আপনাদের কাছে। যাই হোক মহাভারতের এমন এমন সব ঘটনা রোয়েছে যা পড়লে সত্যি আপনাদের রাজনীতির কথা মনে পরে যাবে। কারন মহাভারতে প্রচুর রাজনীতি, কূটনীতি, ষড়যন্ত্র ও ছলনা হয়েছিল। পড়তে পড়তে সবই জানতে পারবেন। তাহলে দেরি না করেক্স শুরু করা যাক।


Karna
মহাভারতে কর্নের ইতিহাস!!


Taking weaponry of karna by lying / মিথ্যা কথা বলে কর্নের অস্ত্রবিদ্যা নেওয়া :

(Mahabharat) মহাভারত পর্বে Karna / কর্ন ছিল একজন শ্রেষ্ঠ মহাবীর। তিনি দানি ছিলেন বলে তাকে দাতাকর্নও বলা হত। কর্ন জন্ম নেওয়ার পর তাকে তার মাতা কুন্তী নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিল। আগের পোস্টে বলেছিলাম। এখানে ক্লিক করে দেখে নিবেন। তারপর এক রথের সারথি তাকে পেয়ে লালন পালন করেন । কিন্তু তার শরীরে যে, ক্ষত্রিয়ের রক্ত ছিল। তাই তো সে ছোটবেলার থেকেই শ্রেষ্ঠ ধনুর্ধারি হতে চেয়েছিল। কিন্তু সে একজন সারথির পুত্র বলে তাকে কেও ধনুর্বিদ্ধা শিখাতে চাননি। ধনুর্বিদ্যা শেখার জন্যে সে গুরু দ্রোনাচার্যের কাছেও গিয়েছিল। কিন্তু গুরু দ্রোনাচার্য তাকে বিদ্ধা শিক্ষা দেন না, কারন সে একজন সারথির পুত্র ছিল। আর তাছাড়াও গুরু দ্রোনাচার্য অর্জুনকেই সর্বশ্রেষ্ঠ ধনুর্ধারি বানাতে চেয়েছিল। তাই তো তিনি কৌশলে গুরুদক্ষিনা চেয়ে একলব্যের আঙ্গুল কেটে নিয়েছিল। যাতে অর্জুন ছাড়া আর কেও শ্রেষ্ঠ ধনুর্বিদ্যা শিখতে না পারে।


Taking weaponry of karna / কর্নের অস্ত্রবিদ্যা নেওয়া :

তারপরে কর্ন ব্রাম্মনের বেশে ধনুর্বিদ্যা শিক্ষা নিতে গিয়েছিল বিষ্ণু অবতার পরশুরামের কাছে। কারন পরশুরাম ব্রাম্মনদের বিদ্যা শিক্ষা দিতেন, ক্ষত্রিয়দের নয়। বিদ্যা শিক্ষা দেওয়ার আগে পরশুরাম কর্নকে জিজ্ঞাসা করেছিল, হে বালক তুমি কি ব্রাম্মন ? তখন Karna / কর্ন বলেছিল হ্যা আমি ব্রাম্মন। তারপরে পরশুরাম কর্নকে বিদ্যা শিক্ষা দেন। এই মিথ্যা বলেছিল বলে কর্নকে অর্জুনের সাথে যুদ্ধে পরাস্ত হতে হয়েছিল আর তার সাথে অর্জুনের অস্ত্র দিয়ে তার মৃত্যুও হয়েছিল। সম্পুর্নটা বলছি পড়তে থাকুন।


How long did to learn weaponry of karna / কর্নের অস্ত্রবিদ্যা শিখতে কত সময় লেগেছিল ?

আসল গল্পটা শুরু করি। পরশুরামের কাছে কর্নের ধনুর্বিদ্যা শিখতে ১২ বছর সময় লেগেছিল। ১২ বছর পর কি হয়েছিল শুনুন। ১২ বছর পর যখন কর্নের বিদ্যা নেওয়া হয়ে গেছে তখন কোনো এক সময় পরশুরাম বিশ্রাম করতে চেয়েছিলেন। তখন এক শিলার উপর Karna / কর্ন বসেছিল আর সে তার গুরুদেব পরশুরামকে বলেন গুরুদেব আপনি আমার পায়ের উপর মাথা দিয়ে বিশ্রাম করুন। পরশুরাম তাই করেছিলেন। কিছুক্ষন পর একটি পোকা এসে কর্নের অন্য পায়ের উপর বসে তার পাটিকে কাটতে কাটতে চলে যায়। কিন্তু কর্ন একটুও নরেনি। কারন সে জানে যে, নড়লেই গুরুদেবের বিশ্রাম ভঙ্গ হয়ে যাবে। তাই পোকার কামড়ের ব্যাথায় ঠিক থাকতে না পেরে সে শুধু মুখ দিয়ে ইস করেছিল। আর তাতেই ঘুম ভেঙে যায় পরশুরামের।


Porshurama's curse on karna / কর্নকে পরশুরামের অভিশাপ :

বিশ্রাম থেকে উঠে পরশুরাম দেখে যে, একটি পোকা কর্নের পা কেটে চলে গেছে আর Karna / কর্ন ব্যাথায় একটুও নরেনি। তখন পরশুরামের সন্দেহ হয় আর কর্নকে বলে তুমি তো ব্রাম্মন হতে পারোনা। কারন তুমি যদি ব্রাম্মন হোতে তাহলে এভাবে চুপ করে থাকতে পারতে না। সত্যি করে বলো কে তুমি ? তখন কর্ন পরশুরামের কাছে তার জীবনের সত্যি ঘটনাটি বলে। কর্নের কথা শুনে গুরুদেব পরশুরাম বলে আমাকে আগে বলতে তাহলে আমি তোমাকে অন্য এক যোগ্য গুরুর কাছে পাঠাতাম। কিন্তু তুমি তো আমাকে মিথ্যা বলে বিদ্যা শিক্ষা নিয়েছো। এই বলে গুরুদেব পরশুরাম রাগে কর্নকে অভিশাপ দেন যে, আমার থেকে শিখে নেওয়া বিদ্যা যখন তোমার জীবনে সবথেকে বেশি দরকার হবে তখন তুমি তোমার এই বিদ্যা ভুলে যাবে।


Karna became king of ongoraj / কিভাবে কর্ন অঙ্গরাজ্যের রাজা হয়েছিল ?

কর্নতো সবসময়েই অর্জুনের সাথে যুদ্ধ করতে চাইত। কারণ সে একজন শ্রেষ্ঠ ধনুর্ধারী হোতে চেয়েছিল। যখন Karna / কর্ন পরশুরামের থেকে বিদ্যা শিখে এসেছিলো তখন কর্ন অর্জুনের একটি নমুনা যুদ্ধ হয়েছিল। কিন্ত কর্ন একজন সারথি পুত্র ছিল বলে তার যুদ্ধের কোনো অধিকার ছিল না। কিন্তু কর্নের মনে অর্জুনের প্রতি প্রচুর হিংসা ছিল। এই হিংসাটা দুর্যোধন বুজতে পারে। আর ভবিষ্যতে যাতে দুর্যোধনের পক্ষ হয়ে কর্ন অর্জুনের সাথে যুদ্ধ করতে পারে, তারজন্যে দুর্যোধন কর্নকে অঙ্গরাজ্যের রাজা বানিয়ে দেন। কারন তিনি যদি রাজা হন তাহলে তিনি পান্ডবদের সাথে যুদ্ধ করতে পারবেন। এই ফন্দিই দুর্যোধন করেছিল। কিন্তু বিধাতার লেখা তো অন্যরকমই ছিল। আর বিধাতার লেখা কেও পাল্টাতে পারে না।


মহাভারতের কিছু অজানা তথ্য। (পড়ুন)


Death of karna in mahabharat / মহাভারত পর্বে কর্নের মৃত্যু :

পরশুরামের অভিশাপ সত্যি হয়েছিল। (Mahabharat) মহাভারত পর্বে যখন অর্জুন ও কর্ন যুদ্ধের জন্য একসাথে হয়েছিল তখন কর্ন তার বিদ্যা ভুলে গিয়েছিল আর তার সাথে তার রথের চাকা মাটিতে দেবে গিয়েছিল। এই সুযোগে শ্রীকৃষ্ণের কথা অনুযায়ী অর্জুন কর্নকে হত্যা করে।


What happen's after death karna ? কর্নের মৃত্যুর পর কি হয়েছিল ?

কর্নের মৃত্যুর পর রাজমাতা কুন্তী এসেছিল কর্নের কাছে তাকে দেখতে। আসলে কর্নের গলায় কবজ কুন্ডল দেখে কুন্তী তো বুঝেই গিয়েছিলেন যে Karna / কর্ন তার ছেলে। রাজমাতা কুন্তী কর্নকে বলেও ছিলেন যে সে তার পুত্র এবং পান্ডবরা তার ছোট ভাই। কিন্তু কর্ন মনে করতেন যে, সে দুর্যোধনের কাছে ঋণী। সে যা বলবেন কর্ন তাই করবেন। কারন দুর্যোধন কর্নকে অঙ্গরাজ্যের রাজা বানিয়েছিলেন। সে যে নিজের স্বার্থের জন্যে কর্নকে রাজা বানিয়ে ছিলেন এই কথা কর্ন বিশ্বাস করতে চাইতেন না। তিনি সবসময় দুর্যোধানকে নিজের প্রিয় মিত্র মনে করতেন এবং তার সকল আদেশ পালন করতেন। তাই তো স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ কর্নকে বলেছিলেন কৌরবদের পক্ষ ছেড়ে দিতে কিন্তু তিনি মানেননি। 


যাই হোক কর্নের আহত শরীর দেখে যখন রাজমাতা কুন্তী কাঁদছিল তখন পান্ডবরা এসে বলেন মাতা আপনি কাঁদছেন কেনো ? এ তো আমাদের শত্রু। কুন্তীর ভীষণ কান্না দেখে পান্ডবরা জিজ্ঞাসা করেন যে আসল রহস্যটা কি ? তখন কুন্তী বলে এ তোমাদের বড়ো ভাই ছিল। এর জন্ম আমার বিবাহের পূর্বে হয়েছিল বলে আমি একে ভাসিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ভবিষ্যৎ অন্যরকম ছিল তাই কর্নকে আবার আমার নিকট নিয়ে আসে বিধাতা। সহদেব তার মাতা কুন্তিকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন এ তো সবসময় আমাদের সাথে শত্রুতা করেছিল এ কি করে আমাদের ভাই হোতে পারে। তখন কুন্তী বলে না ! কর্ন সবসময় তোমাদের রক্ষা করেছিলেন। তাই তোমরা এখনো জীবিত আছো। পান্ডবরা তখন তাদের ভুল বুজতে পারে এবং তারাও যে কর্নকে অপমান করেছিল সেজন্যে তারা কর্নের কাছে ক্ষমা চায়। ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির এই সত্য জানতে পেরে তিনি তার মাতাকে কে বলেছিলেন যে আপনি এই সত্যটা এতদিন থেকেও আমাদের কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছেন। তাই আমি বলছি আজকের পর থেকে কোনো মহিলা কোনো গোপন কথা লুকিয়ে রাখতে পারবে না। তাই তো দেখবেন পুরুষদের মতো মহিলাদের গলায় ঘ্যাগ হয় না। আর মহিলারা কোনো কথা লুকিয়েও রাখতে পারে না। এই ছিলো (Mahabharat) মহাভারত পর্বে মহাবীর কর্নের কথা।


Conclusion / উপসংহার :

কেমন লাগল (Mahabharat) মহাভারত পর্বের মহাবীর Karna / কর্নের অস্ত্রবিদ্যার কাহিনীটি শুনে। কাহিনীটি পরে এখন আপনাদের মনে কি চলছে, আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানান। আরো এইরকম ধর্মকথা পড়া ও জানার জন্যে আমাদের এই সাইটটি সবস্ক্রাইব করে রাখুন। ধন্যবাদ।


FAQ / সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর :

একটি কমন প্রশ্ন ও তার উত্তর নিয়ে আলোচনা করা যাক। প্রায় লোকের মনেই এই প্রশ্নটি থাকে।


সর্বশ্রেষ্ঠ ধনুর্ধারী কে ছিল ? অর্জুন না কর্ন ?

সর্বশ্রেষ্ঠ ধনুর্ধারী কর্ন ছিলেন। কারন শ্রীকৃষ্ণ যখন অর্জুনকে বলেন কর্নকে বধ করার জন্যে তখন কর্ন তার বিদ্যা ভুলে গিয়েছিল। তার রথের চাকা মাটিতে ডেবে গিয়েছিল। আর তার ও আগে তার থেকে তার কবজ খুলে নেওয়া হয়েছিল। এইজন্যে কর্ন শ্রেষ্ঠ ধনুর্ধারী, অর্জুনের থেকে।

Tags

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.