প্রিয় সনাতনী ভক্তরা, আজ আমরা এক নতুন কাহিনীর কথা জানবো। কাহিনীটি হলো যে কিভাবে বৈকুন্ঠ ধামের Mahaprasad পুরীতে এসেছে ? নমস্কার, sanatan sikkha র আজকের এই পোস্টে আমরা Prasad ও Mahaprasad সম্পর্কেও অনেককিছু জেনে নিবো। শুধু আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
প্রথমে বলে নেই যে, প্রসাদ কিন্তু তিন ধরনের হয়ে থাকে। যথাঃ 1- প্রসাদ, 2- মহাপ্রসাদ, 3- মহা মহা প্রসাদ। আমাদের যদি আপনারা বেশি করে কমেন্ট করেন তাহলে আমরা এই প্রসাদ নিয়েও দারুন একটি পোস্ট তৈরী করবো। তাহলে চলুন আসল বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক।...
মহাপ্রসাদের কাহিনী |
নারদমুনি :
একবার নারদমুনির খুব ইচ্ছে হয়েছিল যে তিনি নারায়নের Mahaprasad সেবা করবেন। যা মালক্ষী ছাড়া অন্য দেব দেবীর কাছে ছিলো প্রায় অসম্ভব। মহাপ্রসাদ সেবা করার জন্যে তিনি এতটাই ব্যাকুল হয়ে গিয়েছিলেন যে তিনি মালক্ষীর তপস্যা করা শুরু করে দিলেন। ১২ বছর পর দেবর্ষি নারদের তপস্যায় মালক্ষী সন্তুষ্ট হন। তারপর মালক্ষী দেবর্ষি নারদকে দেখা দেন। তারপর নারদকে বলেন, বলো তুমি কি বর চাও ? উত্তরে নারদমুনি বলেন মাতা, আমার নারায়নের মহাপ্রসাদ সেবা করার খুব ইচ্ছে হয়েছে। তখন মালক্ষী নারদকে বলেন ঠিক আছে প্রভু সেবা করার পরে আমি তার মহাপ্রসাদ তোমাকে দিব। অবশেষে দেবর্ষি নারদ প্রভুর মহাপ্রসাদ পেলেন। সেই মহাপ্রসাদ সেবা করার পরে দেবর্ষি নারদের অন্তরে আনন্দে ভোরে যায়। এবং তিনি সেই আনন্দে নাচতে নাচতে এবং তার হাতের করতাল বাজিয়ে ও নারায়ন নারায়ন বলতে বলতে কৈলাসের দিকে রওনা হন।
মহাদেব :
যখন দেবর্ষি নারদ কৈলাসে এলেন, তারপর দেবর্ষি নারদের সাথে মহাদেবের দেখা হয়। মহাদেব দেবর্ষি নারদকে দেখে জিজ্ঞাসা করেন যে, হে নারদ তোমার এতো খুশি আনন্দের কারন কি ? উত্তরে নারদমুনি বলেন শ্রীহরি নারায়নের mahaprasad সেবা করার পরে আমার মনের ভিতরে আনন্দে ভোরে গিয়েছে। এরপর মহাদেব নারদমুনিকে বললেন যে সেও শ্রীহরি নারায়নের মহাপ্রসাদ সেবা করতে চায়। নারদমুনি বলেন প্রভু এখন তো আর সম্ভব নয়। তারপর কিছুক্ষনের মধ্যে মহাদেব, নারদমুনির হাতে একটু শ্রীহরি নারায়নের মহাপ্রসাদ দেখতে পায়। মহাদেব সেই একটুখানি প্রসাদ ধুয়ে সেবা করেন এবং সেবা করার পর তান্ডব নৃত্য করা শুরু করে দেন। মহাদেবের তান্ডব নৃত্য দেখে দেবী পার্বতী চিন্তা করেন, এখনো তো বিশ্বের ধ্বংসের সময় হয়নি তাহলে মহাদেব এমন নৃত্য করছেন কেন ? অতঃপর দেবী পার্বতী জানতে পারেন যে মহাপ্রসাদ সেবা করায় মহাদেব তান্ডব নৃত্য করছেন। এরপর দেবী পার্বতীরও মনে ইচ্ছে হলো যে সেও মহাপ্রসাদ সেবা করবে।
দেবী পার্বতী :
মহাপ্রসাদ সেবা করার জন্যে দেবী পার্বতী শ্রীহরি নারায়নকে স্মরণ করেন। প্রভু নারায়ন দেবীকে দেখা দেওয়ার পর দেবী নারায়নকে বলেন মহাপ্রসাদের কথা। তিনি বলেন তিনি মহাপ্রসাদ সেবা করতে চায়। দেবী আরো বলেন, এই জগতে সবাইতো আমার সন্তান। তাই আমি mahaprasad সেবা করবো কিন্তু আমার সন্তানেরা সেবা করতে পারবে না, তা কিকরে হয় ? তারজন্যে দেবী পার্বতী শ্রীহরি নারায়নের কাছে অনুরোধ করেন যে সবাই জেন তার মহাপ্রসাদ সেবা করতে পারে সেই সুযোগ করে দেওয়ার জন্যে। নারায়ন বলেন ঠিক আছে কলিকালে আমি যখন জগন্নাথ রূপে লীলা করবো তখন আমার মহাপ্রসাদ সবাই সেবা করতে পারবে।
অবশেষে পুরীতে এলো Mahaprasad :
আমরা মোটামোটি সবাই জানি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কথা। পুরীর জগন্নাথ মন্দির, যেটা ওড়িশ্যাতে অবস্থিত। পুরীর জগন্নাথ মন্দির দেখার জন্যে প্রতিদিন সেখানে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ দেশ ও বিদেশ থেকে আসেন। আর যখন রথযাত্রা হয় তখন তা কোটিতে পৌছিয়ে যায়। আবার পুরীতে জগন্নাথ মন্দিরের পাশেই আছে মা বিমলা দেবীর মন্দির অর্থাৎ পার্বতী দেবীর মন্দির। এই জগন্নাথ মন্দিরে প্রতিদিন ভোগ দেওয়া হয়। সেই ভোগ প্রথমে মাতা বিমলা দেবীর মন্দিরে দেওয়া হয় তারপর সে mahaprasad সবাই সেবা করার সুযোগ পান।
উপসংহার :
আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা বুজতে পারলেন যে কিভাবে বৈকুন্ঠ ধামের mahaprasad পুরীতে আসে। আরো এইরকম সনাতনী ধর্ম কথা জানার জন্যে আমাদের সঙ্গে থাকবেন, পাশে থাকবেন। আপনারা যদি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রহস্যর কথা জানতে চান তাহলে আমাকে বেশি করে কমেন্ট করবেন। আমি পোস্ট দেওয়ার চেষ্টা করবো। আজ তাহলে বিদায় নিচ্ছি। জয় রাধে ।।
FAQ :
জগন্নাথ দেবের মন্দির কোথায় অবস্থিত ?
জগন্নাথ দেবের মন্দির ওড়িশ্যা রাজ্যের পুরী শহরে অবস্থিত।
জগন্নাথ দেবের মন্দিরে কার কার মূর্তি আছে ?
জগন্নাথ মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম ও শুভদ্রার মূর্তি আছে।
জগন্নাথ মন্দিরের নির্মতা কে ?
জগন্নাথ মন্দিরের নির্মতা হলো রাজা ইন্দ্রদুম্ম। তিনি একজন বিষ্ণু ভক্ত রাজা ছিলেন।