হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে ।।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ।।
Sanatan Sikkha তে আপনাদের সবাইকে স্বাগত। আজকে আমি খুবই সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আজকের পোস্টে Krishna নামের মহিমা নিয়ে আলোচনা করা হবে। দেখুন কৃষ্ণ নামের যে মহিমা রয়েছে তা কি আর এক দু কথায় বলা যায় ? বলা যায় না। Krishna নামের মহিমার কথা যদি বলা যায়, তবে তার শেষ নেই। তবুও আজকের পোস্টে সামান্য কিছু আলোচনা দিয়ে আমি আপনাদের বোঝানোর চেষ্টা করবো। আমি কিছু উদহরন দিয়ে আপনাদের বোঝানোর চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে আলোচনাটি শুরু করি।
Krishna নামের মহিমা |
নারদমুনি :
Krishna নামের মহিমার কথা জানতে একবার নারদমুনির খুব ইচ্ছে হয়েছিল। তিনি তা জানার জন্যে ব্যাকুল হয়ে গিয়েছিলেন। সে মনে মনে ভাবতে লাগলো যে ভাবেই হোক আমাকে জানতেই হবে। তাই তিনি বিষয়টা জানার জন্যে Trideb এর কাছে গেলেন। অর্থাৎ তিনি ব্রম্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের কাছে গিয়েছিলেন। এবং সবাইকে তিনি বলেছিলেন যে প্রভু, দয়া করে আমাকে বলুন যে কৃষ্ণ নামের মহিমা কি ? কিন্তু তারা নারদমুনিকে কিছুই বলেন না। তারা বলেন এই বিষয়টা জানতে তুমি যমরাজের কাছে যাও। সেই তোমাকে বলতে পারবে।
কোনো কিছু না ভেবে নারদমুনি যমরাজার কাছে যায়। কারন সে তো ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। তাকে বিষয়টা জানতেই হবে। অবশেষে তিনি যমরাজকে জিজ্ঞাসা করলেন যে Krishna নামের মহিমা কি ? আমাকে বলুন আমার খুব জানতে ইচ্ছা করছে। তখন যমরাজা তাকে অন্য একটি জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে নারদমুনি দেখে যে পাপীদের কিভাবে শাস্তি হচ্ছে। কত ভয়ঙ্কর ছিলো সেই দৃশ্যটি। তা দেখে নারদমুনি হে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ বলতে লাগলেন। এই নাম পাপীদের কানে পৌছালো এবং তারা স্বর্গ ধামে যেতে লাগলো। এই হলো কৃষ্ণ নামের মহিমা।
এক পাপীর গল্প :
কথাই আছে আপনি যদি ভগবানের দিকে এক পা এগোন তাহলে ভগবানও আপনার দিকে দশ পা এগোবেন। এই গল্পটি পড়লে বুজতে পারবেন। এক পাপী ছিলো। খুব তার অহংকার ছিলো। আর আপনারা তো ভালোভাবেই জানেন যে প্রান গোবিন্দ অহংকার সহ্য করতে পারেন না। যে ভাবেই হোক তিনি অহংকার চূর্ণ করবেনোই। আর সেই পাপীর কথা বলি যে এমন কোনো অপরাধ নেই যে তিনি করেন নি। তিনি সমাজের সাথে প্রচুর পরিমানে অন্যায়, অত্যাচার, করেছেন। বলতে পারেন তিনি একজন কৃষ্ণ বিমুখ অসুর ছিলেন। তাদের শাস্তি দিয়েছেন। এমন কি তার ভয়ে গোটা সমাজ আতঙ্কে ও ভয়ে জীবন ধারন করতেন।
একদিন এক চমৎকার হলো। সেই পাপীর মনে করুনার জন্ম হলো। আর এই চমৎকার প্রান গোবিন্দ ছাড়া আর কেও করতে পারে না। তাই না হলে একজন কৃষ্ণ বিমুখ অসুর কোনোদিনও কৃষ্ণ কথা ভাবার কথা চিন্তা করতে পারে না। সেই পাপীর মন যখন করুনায় ভোরে গেলো তখন সে ভেবেছিলো যে এই মায়াময় সংসারে মায়া কাটিয়ে তাকে মুক্তি পেতে হবে। সে মনে মনে বলেছিল এখন থেকে আমাকেও Krishna নাম করতে হবে। মনে মনে এই কথা ভেবে তিনি বাজারে গেলেন। তিনি বাজারে গিয়েছিলেন ফুল, তিলক,চন্দন ও মালা কিনতে। ঠিক সেই সময়ে তার পাপের জন্যে জমরাজা তাকে শাস্তি দিবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অতঃপর তার এক্সিডেন্ট হয়। এবং তার প্রান নিতে যখন যমরাজা আসেন তখন শ্রীকৃষ্ণ যমরাজকে বলেন এখন আপনি এই লোকটির প্রান নিবেন না কারন এই লোকটি Krishna নাম করার কথা চিন্তা করেছেন। এই কথা শুনে যমরাজা সেখান থেকে চলে যায়। তাহলে বুজতেই তো পারলেন যে কৃষ্ণ নামের কি মহিমা রয়েছে। হরে কৃষ্ণ।
( শ্রীকৃষ্ণের অষ্টত্ত্বর শতনাম ) অবশ্যই পড়বেন।
মহাপ্রভু এনেছিলেন Krishna নাম :
গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর জন্ম হয়েছিল নদীয়াতে। তিনি কিন্তু আর কেও না তিনি স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। Krishna নামের এতোই যে মহিমা যে তিনি কৃষ্ণ হয়েও কৃষ্ণভক্ত হয়ে জন্ম নিয়েছেন। কেনো জানেন ? কৃষ্ণ নাম প্রচার করার জন্যে ও কৃষ্ণ নামের রস আস্বাদন করার জন্যে। আগেই বলেছি তিনি কিন্তু ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তিনিই আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন যে কলিযুগে কোনো পূজা পার্বন নয়, যজ্ঞ নয়, তপস্যা নয় শুধুমাত্র কৃষ্ণ নাম করেই সমস্ত জীবকূল উদ্ধার হয়ে যেতে পারে। তাই তিনি নিজে প্রচার করে জীবকুলকে দেখিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। তাই তো কথায় আছে....
একবার কৃষ্ণ নামে যে পাপ হরে।
জীবের কি সাধ্য আছে, সেই পাপ করে।।
অর্থাৎ একবার কৃষ্ণ নাম করে যে পাপ দূর হয়, জীব আর সেই পাপ করতেই পারবে না। এমনি মহিমা রয়েছে কৃষ্ণ নামের। তাই তো আমাদের Krishna নাম করতে হবে। তাহলে চিন্তা কিসের, সব কিছু ভুলে গিয়ে সবাই মিলে কৃষ্ণ নাম করি...
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে ।।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ।।
Krishna নামের এমনি মহিমা, এমনি গুন যে তার নাম করেই সমস্ত জীবকূল মায়াময় জগৎ ছেড়ে জন্ম মৃত্যুর চক্র থেকে বেরিয়ে উদ্ধার হয়ে যেতে পারে। কৃষ্ণ নামে সমস্ত কিছু সতেজ হয়ে উঠে। মনের ভিতরের অন্ধকার দূর হয়। মনের ভিতর আলোর প্রদীপ জ্বলে। শুধু তাই নয়, কৃষ্ণ নাম করে জীবকূল তাদের সমস্ত পাপ বিনাশ করে মনে ধর্মের স্থাপনা করতে পারে।
উপসংহার :
প্রিয় সনাতনী ভক্তগন, আজকের পোস্টে আমি আলোচনা করার চেষ্টা করেছি যে Krishna নামের মহিমা কি ? আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। নিয়মিত এইরকম পোস্ট পড়ার জন্যে আমাদের সঙ্গে থাকবেন। ধন্যবাদ।।
FAQ :
সাধু, গুরু, বৈষ্ণবের কৃপা হলো তবু কেন জীব নরকে গেলো ?
কারন সেখানে রাধারানীর কৃপা হয়নি। সাধু, গুরু, বৈষ্ণবের কৃপার সাথে রাধারানীরও কৃপা লাগবে। নাহলে কাজ হবে না।
রাধা কৃষ্ণের প্রেম কিরকম ?
রাধা কৃষ্ণের প্রেম অমর। তাদের প্রেম ছিলো দুটি আত্মার মিলন। এবং তাদের প্রেমে কোন কাম প্রবৃতি ছিলো না। তাই তো তাদের দেহ দুটি হলেও আত্মা একটাই।
রাধা আগে না কৃষ্ণ ?
ভগবানের থেকে ভক্ত বড়ো। এই কথা স্বয়ং Krishna বলেছিলেন। তাই রাধা দেবীর প্রেমের কাছে কৃষ্ণ বাধা। আর এইজন্যেই আমরা রাধা কৃষ্ণ বলি। কৃষ্ণ রাধা কিন্তু বলি না।