Sanatan Sikkha তে আজ আপনারা একটি দেহতত্ব কথা জানতে পারবেন। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ন। সবাই এই কথা বলবে না। বিষয়টি হলো কাম কি ? কামকে কিভাবে প্রেমে আনা যায় ? প্রিয় সনাতনী হিন্দুরা আজ আপনারা দারুন একটি বিষয় জানতে চলেছেন। তো একটু সময় করে পড়তে থাকুন। পোস্টটির মধ্যে অনেক মূল্যবান কথা থাকবে। সুতরাং মিস করবেন না।
কাম কি? |
এই পোস্টটিতে সর্বপ্রথমে আমরা জেনে নিবো যে কাম কি আর কামকে কিভাবে প্রেমে রূপান্তরিত করা যায়? তাহলে চলুন শুরু করি.....
কাম কি :
আমাদের দেহে ছয় রকমের রিপু রয়েছে। যথা - কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মৎসৌর্য্য। এই ছয়টি রুপুকে পাঠা বা ছাগলও বলা হয়ে থাকে। পাঠা কিংবা ছাগল কেন বলা হয়ে থাকে একটু শুনুন। ছাগলকে ঘাস খাওইয়ে যেমন পেট ভরানো যায় না। ঠিক তেমনই মানুষ যতই কামনা বাসনা করুক না কেন তাদের মন কোনদিনও ভরে না। তারা যতই কাম করে ততই কামের প্রতি আকৃষ্ট হয়। আর তারা তিলে তিলে ধ্বংস হয়ে যায়। রিপুদের মধ্যে কাম হলো সর্বপ্রধান রিপু। কামকে আপনারা রিপুদের রাজাও বলতে পারেন। কারন কামকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বাকি পাঁচটি রিপু আপনি আপনি নিয়ন্ত্রনে চলে আসে। কথাই তো আছে " কামকে নাচাও কিন্তু কামে নেচো না "। কামের এমনই জ্বালা, আর এমনই ঠেলা, যার কবলে পরে মানুষ নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে না আর দিনের পর দিন ধ্বংস হতে থাকে। তাহলে কিভাবে এই কামকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, আর কিভাবেই বা কামকে প্রেম শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়, আসুন জেনে নেই...।
কিভাবে কামকে নিয়ন্ত্রন করা যায় :
কাম কে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, এই কথাটি একটি উদাহরনের দ্বারা বুঝা যেতে পারে। সবাই যেই উদাহরনটি দেয় আমিও সেই উদাহরনটিই দিব। কারন কামকে নিয়ন্ত্রন করার এর থেকে ভালো উদাহরন আর হয় না। উদাহরনটি হলো উনানে দুধ জ্বাল দেওয়া। মহাজনেরা বলে থাকেন কামকে নিয়ন্ত্রন করতে হলে দুধ জ্বাল দেওয়া শিখতে হয়। মানে মনে করেন আপনি দুধ জ্বাল দিচ্ছেন। কিন্তু দুধ জ্বাল হতে হতে উঠলিয়ে পরে যায়। কামকে নিয়ন্ত্রন করতে হলে মনে রাখবেন দুধ যেন উতলিয়ে পড়ে না যায়। দুধ উতলিয়ে পরে গেলেই কাজ হবে না। তাই যখনই দুধ উতলিয়ে পড়ে যাবে তখন তো আপনি জানতে পারবেন বা বুঝতে পারবেন। ঠিক সেই মুহূর্তে আপনাকে কি করতে হবে জানেন? উনানের খড়ির জ্বালটি টেনে বার করে দিতে হবে। তাহলে দুধের থেকে জ্বাল সরে যাবে। দুধে জ্বালও পড়বে না আর দুধ উঠলিয়েও পড়বে না। এই হলো কামকে নিয়ন্ত্রন করার কায়দা। আর এই কাজে নারীদের সহযোগিতা অতি আবশ্যক। কারন নারী ছাড়া এই কাজ করা অসম্ভব। আর এইজন্যই বলা হয়ে থাকে " ইচ্ছা করলে নারীরা এই সংসারকে স্বর্গ বানিয়ে দিতে পারেন আবার যদি তারা জিদে চলে আসেন, তাহলে তারা অনায়াসেই এই সংসারকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারেন "। তাই কামকে নিয়ন্ত্রন করতে হলে নারীদের সহযোগিতা লাগবেই লাগবে। তাদেরকে ছাড়া এই কাজ করা অসম্ভব।
আরও পড়ুন :
গোলেমালে গোলেমালে ফান্দে পইড়ো না
কাম শক্তিকে কিভাবে প্রেমশক্তিতে রূপান্তরিত করা যায় :
মনে রাখবেন, এই কাজটি করা কিন্তু খুবই কঠিন। আবার একটি কথা আছে এই কাজটি যদি আপনি করতে পারেন তাহলে এর থেকে চরম আনন্দ আর কিছুই হয় না। এই কাজটি করতে পারলে আপনি চরম আনন্দ অনুভব করতে পারবেন। আবার একটি কথা আছে। কাম ছাড়া কিন্তু প্রেম হয় না। দেহে যদি কামই না থাকে তাহলে প্রেম কিভাবে হবে। ( কথাটা কেমন হয়ে গেলো না, যে কাম খারাপ, পাঠাতুল্য। আবার কাম ছাড়া প্রেম হয় না )। বলছি, কামকে দরকার হয় কিন্তু কাম কে সৎ পথে ব্যবহার করতে হয়। এর জন্যে কিছু কায়দা কানুন রয়েছে যা গুরু ধরে জানতে হয়।
মনে রাখবেন, নিজের ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্যে আপনি যদি কাম করে থাকেন তাহলে আপনি কোনোদিনও সফল হতে পারবেন না। আর যদি আপনি কৃষ্ণ ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্যে কাম করেন তাহলে তা ধীরে ধীরে প্রেমে রূপান্তরিত হয়। মানে আপনাকে নিষ্কাম কর্ম করতে হবে। সেখানে কোনোরকম কিছু চাওয়া পাওয়া যেন না থাকে। মানে কামের সময় সমস্ত কিছু ভগবানের কাছে সমর্পন করে দিতে হবে। নিজের কাছে কিছু রাখা যাবে না। একটু বুঝে নিবেন।। হরিবোল।।
উপসংহার :
আজকে কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো। এটা কিন্তু দারুন একটা পোস্ট। যারা এই লাইনে এসেছেন বা আসবেন বলে ভাবছেন তাদেরকে কিন্তু কাম কি ? কামকে কিভাবে প্রেমে আনা যায় তাদেরকে এই বিষয়টির ব্যাপারে জানা খুব খুব দরকার। তাহলে sanatan sikkha র সঙ্গে থাকবেন। আজ তাহলে বিদায় নিচ্ছি। ( জয় রাধে )।