নিধুবনের সাথে radha krishna এর গভীর সম্পর্ক্য রয়েছে। দুজনে নিধুবনে অনেক লীলা করেছেন। এর মধ্যে রাসলীলা হলো একটি মুখ্য লীলা। প্রিয় ভক্তগন নিধুবন এবং রাধা কৃষ্ণের সম্পর্ক্য নিয়ে মোটামোটি অনেক কিছুই এই পোস্টে আলোচনা করবো। দয়া করে আপনারা সম্পূর্ন পোস্টটি পড়বেন। নিধুবন হলো কৃষ্ণের প্রিয় জায়গা। শ্রীকৃষ্ণ নিধুবনে রাধারানির সাথে দেখা করতেন। তাই নিধুবন, আজ আমাদের হিন্দুদের কাছে শ্রেষ্ঠ একটি ধর্মীয় স্থান।
নিধুবন এবং রাধা কৃষ্ণ |
নিধুবন কোথায় অবস্থিত ?
যমুনার তীরে বৃন্দাবনের সামনে নিধুবন অবস্থিত। এই বনকে অনেকে মধুবনও বলে থাকেন। বা বলতে পারেন নিধুবনকে মধুবনও বলা হয়ে থাকে। সনাতনীদের কাছে নিধুবন হলো একটি পবিত্র ধর্মীয় স্থান। কারন এই স্থান radha krishna এর মিলনের স্থান। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে নিধিবন হল খুবই একটি গুরুত্বপূর্ন পবিত্র স্থান এবং রহস্যজনক স্থান। এই স্থানে রয়েছে বেশ কিছু রহস্য আজও রহস্য হয়েই আছে। সবকিছুই জানবো ওই পোস্টে তবে মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়তে থাকুন।
নিধুবন ও radha krishna :
নিধুবন হল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের খুব একটি প্রিয় স্থান। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এবং সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন যে, নিধুবনে প্রতিরাতেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বেড়াতে আসেন। শুধু তাই নয়, প্রতি রাতে নিধুবনে radha krishna রাস করেন। শুধু তাই নয় তিনি গোপীদের সাথেও রাসলীলা করেন। এই কারণেই প্রত্যেকদিন সন্ধ্যাবাতি দেওয়ার পর নিধুবনের প্রবেশ দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবং পরের দিন ভোরবেলায় দরজা খুলে দেওয়া হয়। এই সময় নিধুবনের ভিতরে কেউ থাকতে পারেনা। এমনকি এই সময় পশু পাখিরা অনেক কমে যায়।
নিধুবনের ভিতরে রয়েছে একটি প্রাসাদ। যেই প্রাসাদকে রংমহল বলা হয়ে থাকে। এই রংমহলের ভেতরে একটি চন্দন কাঠের বিছানা রয়েছে। বিছানাটি প্রতি রাতেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্য সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়। এছাড়াও রংমহলের ভিতরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্য রাখা হয় পাত্র ভরে জল, নিমের দাঁতন এবং পান বানিয়েও রাখা হয়। যারা ভক্ত, তারা বিশ্বাস করেন যে, ভোর বেলায় রংমহলের দরজা যখন খোলা হয় তখন রংমহলের ভেতরে থাকা বিছানার অবস্থা এমন হয়ে থাকে যে, দেখে মনে হয় বিছানার উপরে কেউ শুয়েছিল । এছাড়া জলের পাত্রে জল থাকে না, বা পাত্রের জল কমে যায়। নিমের দাঁতন ব্যবহার করা হয়। এবং সব থেকে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো রংমহলের ভিতরে সাজিয়ে রাখা পানটুকুও থাকে না। সেটা নাকি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সেবা করেন।
আরোও পড়ুন :-
রাধারানী চরণধূলি শ্রীকৃষ্ণের মাথায় দিয়েছিলেন কেন ?
নিধুবনের রহস্য :
নিধুবনের রাসলীলা দেখার জন্য যদি কেউ বনের ভেতরে লুকিয়ে থাকেন তবে তিনি বোকা, অন্ধ কিংবা পাগল হয়ে যান। এইজন্যে রাত আটটা বাজতে না বাজতেই সেখান থেকে সকল ভক্ত এবং পূজারীরা চলে আসেন। এমনকি পশুপাখি এবং বানরেরাও সেই স্থান ছেড়ে পার্শ্ববর্তী বন অঞ্চলে চলে যান। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন যদি কেউ রাতের বেলা নিধুবনে থাকেন তাহলে তার সাংসারিক বন্ধন ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কারণ একটাই, এই সময়ে মানে রাতে নিধুবনে radha krishna লীলা করেন।
প্রায় আড়াই একর জুড়ে নিধুবনের গাছপালা বিস্তৃত রয়েছে। এখানকার কোন গাছই সোজা নয়। এখানকার ছোট বড় প্রায় প্রত্যেকটি গাছই প্যাঁচানো। শুধু প্যাঁচানো নয়, ছোট বড় প্রায় প্রত্যেকটি গাছের কান্ডই নিচের দিকে হেলানো অবস্থায় রয়েছে। আর নিধুবনের তুলসী গাছও জোড়ায় জোড়ায় বিরাজমান হয়ে আছে। কথায় আছে যে, রাতের বেলায় গাছগুলো গোপীর রূপ ধারন করে শ্রীকৃষ্ণের সাথে রাসলীলা করেন। এবং ভোর হতে না হতেই তারা আবার গাছে রূপান্তরিত হয়ে যান। লোকেরা বলে থাকেন নিধুবনে অবস্থিত তুলসী গাছের কোন অংশই কেউ কোথাও নিয়ে যেতে পারেন না। যদি কেউ নিয়ে যেতে চান তাহলে তার মারাত্মকভাবে খারাপ অবস্থা হয়ে থাকে।
নিধুবনের প্রতিবেশী :
নিধুবনের আশেপাশে অনেক ঘরবাড়ি রয়েছে। সেখানকার সাধারন লোকেরা দিনের বেলায় নিধুবনের সৌন্দর্য নিজের চোখে দেখতে পারেন। কিন্তু সন্ধ্যা আরতির পর রাত আটটা বাজতে না বাজতেই তারা তাদের ঘরবাড়ির জানালা খোলার সাহস পান না। কারন তারা জানেন রাতের বেলায় radha krishna সেখানে লীলা করেন। যদি কেউ ভুলবশতঃ জানালা খোলা রাখেন বা কেউ যদি ভুল করে বনের দিকে তাকান তাহলে সে অন্ধ কিংবা পাগল হয়ে যান।
ভারতের মথুরা জেলায় অবস্থিত নিধুবন সত্যিই একটি চমৎকারি জায়গা। এখানে নানান জায়গা থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা বেড়াতে আসেন। এই বনের রহস্য সকলকে অবাক করে দেয়। তবে অনেকেই মনে করেন এই বনের রহস্য উন্মোচন করা কোনদিনও সম্ভব নয়। তবে একটা কথা বলে দেই, নিধুবনের রংমহল সম্পর্কে এখনো অনেক কিছু অনুসন্ধান করা বাকি রয়েছে।
উপসংহার :
আপনাদের কেমন লাগলো নিধুবন এবং Radha krishna এর লীলা সম্পর্কে জেনে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জয় রাধা কৃষ্ণ বলবেন। এই রহস্যময় লীলার কথা জেনেই আপনাদের যদি নিধুবনে বেড়াতে যেতে ইচ্ছে করে তাহলে অবশ্যই যেতে পারেন। সেখান থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন। আজ তাহলে এই পর্যন্ত থাক। পরবর্তীতে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের কাছে চলে আসব খুবই তাড়াতাড়ি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। জয় রাধে।।