Breaking Ticker

Life Story Of Mira ।। মিরাবাঈয়ের জীবন কাহিনী

প্রিয় সনাতনী ভক্তরা, sanatan sikkha র পোস্টে আপনারা ভগবানের কথা, দেব-দেবীর কথা, পূজা পার্বণ কিংবা ধর্ম কথা নিয়ে অনেক পোস্ট পড়েছেন। কিন্তু আজকের পোস্টটি আমি একটু অন্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। হ্যাঁ, আজকের পোস্টটি আমি একজন পবিত্র কৃষ্ণ ভক্ত mira বাঈয়ের জীবন কাহিনী নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। mira বাঈ আগের জন্মে কে ছিলেন ? কেনই বা তাকে মীরা হয়ে জন্ম নিতে হয়েছিল ? শেষ বয়সে মীরার কি পরিনতি হয়েছিল ? আর এত শুদ্ধ এবং পবিত্র কৃষ্ণ ভক্ত হওয়া সত্বেও তিনি শেষ পর্যন্ত কেন শ্রীকৃষ্ণের দেখা পাননি ? এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আজকের পোস্টে আলোচনা করা হবে। সঙ্গে থাকবেন, আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে।


Mira
মিরাবাঈয়ের জীবনী 

Mira বাঈ আগের জন্মে কে ছিলেন :

দ্বাপর যুগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একজন সখা ছিল, যার নাম ছিল সুবল। আর শুভলের স্ত্রী ছিলেন মাধবী। এই মাধবী কলিযুগে mira বাঈ হয়ে জন্ম নিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে মীরাবাঈ হয়ে জন্ম নিতে হয়েছিল কেন ? জানার জন্য পোস্টটি পড়তে থাকুন।


মাধবী mira বাঈ হয়ে জন্ম নিয়েছিল কেন :

শ্রীকৃষ্ণের সখা সকলের সঙ্গে যখন মাধবীর বিবাহ হয়, তখন শ্রীকৃষ্ণ তার সখা সুবলকে কে বলেছিল তোমার স্ত্রীর মুখটা সবার আগে আমাকে দেখাবে। সুবল তাতে রাজি হল। অপরদিকে মাধবীর মাতা মাধবীকে কাছ থেকে একটি প্রতিজ্ঞা নিয়েছিল। মাধবের মাথা মাধবীকে বলেছিলেন যে এই গ্রামে একজন শিশু রয়েছে সে খুবই দুষ্টু। তার নাম কৃষ্ণ। তুমি কিন্তু ভুলেও কৃষ্ণকে তোমার মুখ দেখাবে না। আর মাধবী তো কৃষ্ণের ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তিনি তার মা তাকে প্রতিজ্ঞা দিয়ে ফেলেন যে সে কোনদিনও তার মুখ কৃষ্ণকে দেখাবেনা। এবার যখন সুবল এবং মাধবী বিবাহ করে আসছিল, তখন sri krishna সেখানেই ছিল। সুবল যখন মাধবীকে বলে ইনি আমার সখা কৃষ্ণ। তখন মাধবী তার ঘোমটা দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে। তিনি কিছুতেই তার মুখ শ্রীকৃষ্ণকে দেখায় না। মাধবীর মুখ না দেখতে পেয়ে শ্রীকৃষ্ণ তাকে বলে, তোমার এত অহংকার ! আমিও তোমাকে বলছি, একদিন এমন আসবে যে তুমিও আমার মুখ দেখার জন্য পাগল হয়ে যাবে। কিন্তু দেখতে পারবে না। এই কারনেই তিনি পরের জন্মে mira বাঈ হয়ে জন্ম নিয়েছিলেন। যিনি ছিলেন একজন শুদ্ধ এবং পবিত্র কৃষ্ণ ভক্ত।


কৃষ্ণভক্ত সুদমার গল্প।

শ্রীকৃষ্ণের পায়ের নুপুর ছোট বড়ো হয় কেন ?


Mira বাঈ শ্রীকৃষ্ণের দেখা পাননি কেন :

Mira বাঈ ছোটবেলা থেকেই কৃষ্ণভক্ত ছিলেন। তার ভক্তিতে কোন রকমের খাদ ছিল না। তিনি একজন শুদ্ধ এবং পবিত্র ভক্ত ছিলেন। যখন শ্রীকৃষ্ণ সবাইকে রক্ষা করার জন্য এবং আশ্রয় দেওয়ার জন্য তার বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল দিয়ে গিরি গোবর্ধন পর্বত উঠেছিলেন, তখন মীরাবাঈ সেখানেই উপস্থিত ছিলেন। তখন মীরাবাঈ দেখেছিলেন যে, একটি কনিষ্ঠ আঙ্গুল দিয়ে একটি পর্বত উঠানো রয়েছে। এবং সেই আঙ্গুলটি ছিল চমৎকারি। সেই আঙ্গুলটি দেখেই তিনি মায়ায় পড়ে গিয়েছিলেন। আঙ্গুলটি দেখেই তার যখন এত মায়া হল, তাহলে তার মুক্তি দেখলে কি অবস্থা হবে, বুঝতেই তো পারছেন। তারপর মীরাবাঈয়ের চোখ গেল শ্রীকৃষ্ণের মুখের দিকে। এত দিব্য এবং মায়াবী চেহারা তিনি আগে কখনোই দেখেননি। তখন মীরাবাঈ তার ভুল বুঝতে পেরেছিলেন। এবং এর জন্য তিনি তার মাতাকেও দোষারোপ করেছিলেন।


শেষ জীবনে mira বাঈয়ের কি পরিণতি হয়েছিল :

শেষ বয়সে mira বাঈয়ের  জীবন খুবই দুঃখে এবং কষ্টে কেটেছিল। শ্রীকৃষ্ণকে এতটা ভালবাসা সত্ত্বেও তিনি শ্রীকৃষ্ণের দেখা পাননি। কথায় আছে একবার মিরাবাঈয়ের শ্বশুরবাড়ির লোক তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কৃপায় তার কোন ক্ষতি হয়নি। আর আমি আপনাদের বলে দেই যে, ভক্তদের জন্য ভগবান সর্বদাই কৃপা করে থাকেন। তারপর mira বাঈকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেই শিকল ফুলের হারে পরিনিত হয়েছিল। এরপর মীরাবাঈ পথ চলতে চলতে দ্বারকায় এসে পৌঁছেছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন এখানে শ্রীকৃষ্ণের দেখা অবশ্যই পাওয়া যাবে। কিন্তু না, শ্রীকৃষ্ণ মীরাবাঈকে কৃপা করে থাকলেও তাকে দর্শন দেননি। দারোকা এসে তিনি শ্রীকৃষ্ণের দর্শন পাওয়ার জন্য কাঁদছিলেন। তারপর তিনি যখন বুঝতে পেরেছিলেন যে, তার মৃত্যুর সময় চলে এসেছে তখন তিনি গাছে একটি কাকের দেখা পেলেন। মীরাবাঈ কাকটিকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, হে কাক আমি মারা যাবার পরে তুমি আমার সবকিছু খেয়ো কিন্তু আমার চোখ দুটিকে খেয়ো না। কারণ আমি আমার এই চোখ দুটি দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের দর্শন করতে চাই। তিনি আরো বললেন যে হে কাক, আমি মারা যাবার পরে আমার হৃদয়টি তুমি শ্রীকৃষ্ণের চরণে সমর্পণ করে দিও।


মীরাবাঈয়ের এই কথাগুলো একজন পূজারী শুনছিলেন। তখন তিনি মীরাবাঈকে গুরুত্ব দেননি। তারপর সেই পূজারী মন্দিরে এসে দেখে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মূর্তির চোখ দিয়ে জল বেরোচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে পূজারী তখন ছুটে চলে যায় মীরাবাঈয়ের কাছে। সেখানে গিয়ে পূজারী মীরাবাঈয়ের আর দেখা পাননি।


উপসংহার :

Mira বাঈয়ের জীবনী দিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আমাদের বোঝাতে চেয়েছেন, শুধু পোটলি এবং প্রেমিকাকে ভালোবাসা ছাড়াও নিঃস্বার্থভাবে অন্য কাউকেও ভালোবাসা যায়। আর এটাই মীরাবাঈ তার জীবন দিয়ে বুঝিয়ে গিয়েছিলেন। ভক্তরা, পোস্টটি আপনাদের কেমন লাগলো কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। আর এইরকমই দারুন দারুন আকর্ষণীয় পোস্ট করার জন্য আমাদের সঙ্গে থাকবেন। ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.