নমস্কার, সনাতন ধর্মের জয়। Sanatan Sikkha সব সময় আপনাদের ধর্মতত্ত্ব দেওয়ার চেষ্টা করে। তাহলে আর সংকোচ কিসের ? এখনই এই ব্লগটিকে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। আজকে সনাতন শিক্ষা একটি ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ গল্প আলোচনা করবে। গল্পটি হলো রাধা কৃষ্ণের গল্প বা radha krishna story। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ যে, আজকের গল্পটি পড়ে সবাই কমেন্টে "জয় রাধে" লিখবেন। দেখবেন, এতে সত্যিই আপনাদের জীবনে মঙ্গল হবে। চলুন তাহলে গল্পটি শুরু করা যাক....
radha krishna story |
আজকের গল্পটি পড়ে আপনারা বেশ কিছু তত্ত্ব সম্পর্কে জানতে পারবেন। যেমন :-
- নারদের অহংকার শ্রীকৃষ্ণ কিভাবে চুর্ন করেন ?
- শ্রীকৃষ্ণের আগে রাধারানীর নাম নেওয়া হয় কেন ?
- রাধারানীকে শ্রীকৃষ্ণের শ্রেষ্ঠ ভক্ত বলা হয় কেন ?
- শ্রীকৃষ্ণের পাশে সব সময় রাধারানী থাকে কেন ?
Radha Krishna Story :
রাধাকৃষ্ণ একই, তারা দুজনে একই সত্তা। অর্থাৎ তাদের দুজনের একই আত্মা। তারা দুটি দেহ ধারন করেছে লীলা করার জন্যে । রাধারানী লীলাতে দেখিয়েছেন যে, কিভাবে শ্রীকৃষ্ণকে ভালবাসতে হয়, কিভাবে তাকে সেবা যত্ন করতে হয় এবং কিভাবে সবকিছু ত্যাগ করে তার প্রতি সমর্পিত হওয়া যায় ?
যারা রাধারানীকে একজন মহিলা বলে মনে করেন অথবা তাকে শ্রীকৃষ্ণের প্রেমিকা বলে মনে করেন, তারা সত্যিই খুব ভুল করেন। রাধা কৃষ্ণ একই। রাজা হলেন শ্রীকৃষ্ণের প্রকৃত এবং শ্রেষ্ঠ ভক্ত। আর ভগবানের থেকে ভক্ত বড়। তাই শ্রীকৃষ্ণ সব সময় রাধারানীকে তার পাশেই রাখেন। শুধু তাই নয়, শ্রীকৃষ্ণের নামের আগে রাধারানীর নাম নিলে শ্রীকৃষ্ণ খুবই প্রীত হন। কারন তিনি বলে গিয়েছিলেন যে আমার থেকে আমার ভক্ত বড়। আশা করি আপনারা বুঝতে পারলেন।
নারদের অহংকার কিভাবে চুর্ন হয় :
রাধারানীর নাম শ্রীকৃষ্ণের নামের আগে নেওয়া হয়, আর তিনি সবসময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পাশেই থাকেন এবং তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ ভক্ত বলা হয়ে থাকে। আর এইসব কারনগুলির জন্য দেবর্ষি নারদের খুব অহংকার হয়েছিল। তিনি বলেন, আমিও তো ভগবানের একনিষ্ঠ ভক্ত। তাহলে রাধারানীকে শ্রেষ্ঠ ভক্ত বলা হয় কেন ? আমাকে কেন নয় ?
এই কথা জানার জন্য দেবর্ষি নারদ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে গেলেন। গিয়ে দেখেন ভগবান মাথা ব্যথার যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। তারপর দেবর্ষি নারদ এবং ভগবানের সাথে কিছু কথা হয়। জানার জন্য পড়তে থাকুন :-
দেবর্ষি নারদ : হে প্রভু, আপনি আমাকে আজ্ঞা দেন যে কি করলে আপনার মাথা ব্যাথা নিরাময় হবে। যদি আমার রক্ত দিয়ে তা ঠিক হয় তাহলে আমি রক্ত দিতেও রাজি।
শ্রীকৃষ্ণ : না না দেবর্ষি নারদ রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। আমার কোন এক ভক্ত যদি আমার মাথায় তার চরণধূলি দেয়, তাহলে আমার মাথাব্যথা চলে যাবে। আপনিও তো আমার এক ভক্ত।
দেবর্ষি নারদ : না প্রভু, এই অপরাধ আমি করতে পারবো না। আমাকে ক্ষমা করবেন। আপনার মাথায় চরনধূলি দেওয়া মানে পাপের বোঝা মাথায় নেওয়া। আমি এটা করতে পারবো না প্রভু।
শ্রীকৃষ্ণ : তাহলে আপনি একবার রুক্মিণীর কাছে যান যদি রুক্মিণীও তার চরনধূলি দেয় তাহলেও আমার মাথার যন্ত্রনা চলে যাবে। তখন দেবর্ষি নারদ রুক্মিণীর কাছে যান। দেবর্ষি নারদ রুক্মিণীর কাছে গিয়ে উনাকে সব কিছু বিস্তারিতভাবে বলেন।
রুক্মিণী : দেবর্ষি, এই অপরাধ আমি করতে পারবো না। এই বিশাল অপরাধ আমি আমার মাথায় নিতে পারবো না। তখন দেবর্ষি নারদ আবার শ্রীকৃষ্ণের কাছে গিয়ে রুক্মিণীর কথা বলেন। তখন শ্রীকৃষ্ণ দেবর্ষিকে রাধার কাছে পাঠান। দেবর্ষি রাধারানির কাছে গিয়ে যা শুনলেন তাতে দেবর্ষি নারদের জ্ঞান হয় যে কেন রাধারানীকে শ্রেষ্ঠ ভক্ত বলা হয়ে থাকে ?
রাধারানি : হ্যাঁ, আমি চরনধূলি দিবো। আমি জানি এটা করা অপরাধ। তবুও এই অপরাধ করার জন্যে আমি রাজি আছি। কারন একটু সময়ের জন্যেও শ্রীকৃষ্ণের মাথার যন্ত্রনা কমানোর জন্যে যদি আমাকে রৌরব নরকে অনন্তকাল পর্যন্ত্য থাকতে হয় আমি তাতেও রাজি। রাধারানীর এই কথাগুলি শুনে দেবর্ষি নারদের জ্ঞান হয়। তিনি তার ভুল এবং অহংকার দুটোই বুঝতে পারেন। এবং এও বুঝতে পারেন যে রাধারানিকে কেন শ্রেষ্ঠ ভক্ত বলা হয়। তখন তিনি নিজে থেকেই "জয় রাধে" বলেন। আপনারাও কমেন্টে একবার "জয় রাধে" বলবেন।
অবশেষে রাধারানী শ্রীকৃষ্ণের কাছে যায়। গিয়ে তার চরণধূলি শ্রীকৃষ্ণের মাথায় লাগিয়ে দেয়। এতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মাথার যন্ত্রণা দূর হয়ে যায়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এইভাবে নারদের অহংকার চূর্ণ করেন। এবং প্রমাণ করে দেন যে তার সর্বশ্রেষ্ঠ ভক্ত হলো রাধারানী।
উপসংহার :
এতক্ষন আপনারা রাধাকৃষ্ণের একটি শিক্ষনীয় গল্প পড়লেন। এই গল্পটি ছোট্ট হলেও এর গুরুত্ব অনেক। radha krishna story কেমন লাগলো, আমাদেরকে অবশ্যই জানাবেন। দেখা হচ্ছে আরও একটি নতুন পোষ্টের সাথে। জয় রাধে ...